সিজদায়ে সাহুর পরিচয়ঃ
সাহু" শব্দটি আরবিতে "ভুল" বা "অমনোযোগিতা" বুঝায়, সেজদায়ে সাহু হলো নামাজে ভুল-ত্রুটি সংশোধনের জন্য নির্ধারিত দুটি সেজদা। এটি তখন আদায় করা হয়, যখন নামাজে ভুলক্রমে কোনো ওয়াজিব আমল বাদ পড়ে বা অতিরিক্ত কিছু যোগ হয়। "
সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হওয়ার মূলনীতিঃ
রাসুল সাঃ বলেন কোন ব্যক্তি যদি সলাতে কোন কিছু বেশী বা কম করে
ফেলে তাহলে (সাজদাহ্-ই সাহুর) দু’টি সাজদাহ্ করবে সহিহ মুসলিম, হা নং ১১৭৪
১. নামাজের কোন ফরজের ধারাবাহিকতা কে ভুলে উল্টাপাল্টা করে আদায় করা। যেমন: কেউ রুকুর আগেই সিজদাহ করল।
২. ভুলে নামাজের কোন ফরজকে কম করা বা বেশী করা। যেমন: কেউ এক রাকাতে দুটি রুকু করল বা দুই সিজদার জায়গায় তিনটি সিজদাহ করলে।
৩. নামাজের কোন ওয়াজিবের ধারাবাহিকতা কে ভুলে উল্টাপাল্টা করে আদায় করা।
যেমনঃ কেউ সুরা ফাতিহা পড়ার আগেই কোন সুরা বা তিন আয়াত পড়লে,বা আত্তাহিয়্যাতুর আগেই পুরো দরুদ শরিফ বা দরুদের মুহাম্মাদ শব্দ পযর্ন্ত বা এই পরিমান সময় চুপ থাকলে বা অন্য কিছু পড়লে।
৪. নামাজের কোন ওয়াজিব কে ভুলে আদায় না করলে।
যেমন ভুলে সুরা ফাতিহা না পড়া বা সুরা ফাতিহার পরে কোন সুরা ভুলে না পড়া। (ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাত ব্যতিত)
বি:দ্র:ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ভুলে কোন সুরা পড়লে সিজদায়ে সাহু করতে হবে না।
৫. প্রথম বৈঠকে ভুলে না বসে পুরোপুরি দাড়িয়ে গেলে।
৬. শেষ বৈঠকে ভুলে আত্তাহিয়্যাতু না পড়া
৭. বিতির নামাজে ভুলে দোয়ায়ে কুনুত না পড়লে ইত্যাদি।
যে সকল ভুলের কারণে সিজদায়ে সাহ ওয়াজিব হয় না:
১. নামাজের কোন সুন্নাত কে ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে আদায় না করলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না।
যেমন কেউ শুরুতে সানা, আউযু বিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়ল না,বা শেষ বৈঠকে দরুদ শরীফ বা দোয়ায়ে মাছুরা পড়ল না, অথবা রুকু, সিজদাতে তাসবীহ পড়ল না
এই গুলো সুন্নাহ, যা আদায় করলে ছাওয়াব হবে, আদায় না করলে গুনাহ হবে না কিন্তু ছাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে।
হাদিসের আলোকে সিজদায়ে সাহু আদায় করার সময়:
সিজদায়ে সাহু সালামের পর আদায় করতে হবে।
হাদিসে আছে হযরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণনা করেন:
"রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একবার নামাজে ভুল করেছিলেন। তিনি সালাম ফেরালেন, এরপর দুই সেজদা করলেন এবং পুনরায় সালাম ফেরালেন। (সহীহ বুখারি: ১২২৪, সহীহ মুসলিম: ৫৭৪)
0 মন্তব্যসমূহ