আয়াত: "তোমরা জেনার নিকটবর্তী হয়ো না" —

আয়াত: "তোমরা জেনার নিকটবর্তী হয়ো না" — এটি কুরআনুল কারিমের একটি আদেশমূলক বাণী, যা সূরা আল-আন'আম, সূরা আল-ইসরা, বা সূরা নূরের মতো সূরাগুলোর বিভিন্ন আয়াতে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষিতে এসেছে। এই বাক্যাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়:

🌙 আক্ষরিক অর্থ:

“তোমরা জেনার (ব্যভিচার/ব্যভিচারিণী নারী) নিকটবর্তী হইও না”

(আরবি: وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَى)

🌟 ব্যাখ্যা ও তাৎপর্য:

জেনা শুধু হারাম নয়, তার ধারেকাছেও যেও না:

এখানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা জেনা করতে নিষেধ করার চেয়েও এক ধাপ বেশি কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন — তিনি বলেছেন “নিকটবর্তী হয়ো না”। অর্থাৎ, এমন কোনো কাজেও লিপ্ত হয়ো না, যা জেনার দিকে নিয়ে যেতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা:

ইসলামে শুধু অপরাধ নয়, অপরাধের সম্ভাব্য উৎস বা প্রলুব্ধিকারক কাজও নিষিদ্ধ। যেমন:

নির্জনে নারী-পুরুষের একান্ত সাক্ষাৎ

অশ্লীল চেহারা দেখা বা পোশাক পরা

অশ্লীল কথা বা বার্তা

সিনেমা, গান, ছবি ইত্যাদিতে অনৈতিকতা


নৈতিক শুদ্ধতা বজায় রাখা:

এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একজন মুমিনকে পবিত্র, আত্মসংযমী, ও চারিত্রিকভাবে দৃঢ় রাখার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।


সমাজ রক্ষার একটি ব্যবস্থা:

জেনা পারিবারিক, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে। এজন্য ইসলাম এমন কাজকে গোড়া থেকেই বন্ধ করতে চায়, যাতে পরিবার, সম্মান, সমাজ সব অক্ষুণ্ন থাকে।

📖 উদাহরণ ও হাদিস:

রাসূল (সা.) বলেছেন:

"চোখেরও জেনা আছে, তা হলো হারাম জিনিসের দিকে কামনার দৃষ্টিতে তাকানো..."

(সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)


✅ সংক্ষেপে:

“জেনার নিকটবর্তী হইও না” — এর অর্থ হলো:

জেনা তো অবশ্যই হারাম, তবে এমন কোনো কাজ, পরিবেশ, আচরণ, কথাবার্তা, পোশাক, চাহনি বা সম্পর্কেও জড়িও না যা জেনার পথে নিয়ে যায়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ