🕋 ১. তকদীর (القدر) — আল্লাহর চিরলিখিত পরিকল্পনা
📖 আল্লাহ বলেন:
“নিশ্চয়ই আমি প্রতিটি বস্তু একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অনুযায়ী সৃষ্টি করেছি।”
(সূরা কাদর: ৩)
🔹 অর্থাৎ, দুনিয়ার প্রতিটি কিছু —
কে কোথায় জন্ম নেবে
কার সাথে কার সাক্ষাৎ ও বিয়ে হবে
কে কার সন্তান হবে
কে কবে মরবে
সবকিছুই আল্লাহর জ্ঞানে ও লওহে মাহফুজে লিখিত।
🍼 ২. মায়ের গর্ভে তকদীর নির্ধারণ
📜 হাদীসে এসেছে:
“তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি তোমাদের মায়ের পেটে চল্লিশ দিন শুক্ররূপে, তারপর চল্লিশ দিন আলকাহরূপে, তারপর চল্লিশ দিন মাংসপিণ্ডরূপে থাকে। এরপর একজন ফেরেশতা পাঠানো হয়, সে তার রুহ ফুঁকে দেয় এবং চারটি বিষয় লিখে দেয়:
১. রিজিক,
২. আমল,
৩. আয়ু,
৪. সে সুখী হবে না দুঃখী।
📚 (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)
🔸 এর মানে — কার গর্ভে সে আসবে, কাকে জীবনসঙ্গী পাবে, সন্তানের ভবিষ্যৎ কী — সব পূর্ব নির্ধারিত।
💑 ৩. বিয়ে এবং জীবনসঙ্গী নিয়তিবদ্ধ
📖 কুরআন বলে:
“তিনিই তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন।”
(সূরা রূম: ২১)
🔹 এখানে "তোমাদের মধ্য থেকে" মানে — জীবনসঙ্গী নির্ধারিত, আর এ প্রেম-ভালোবাসাও আল্লাহর পক্ষ থেকে তকদীরের অংশ।
👶 ৪. কার গর্ভে কার সন্তান আসবে — আল্লাহই জানেন ও ঠিক করেন
📖 আল্লাহ বলেন:
“আল্লাহ যাকে চান কন্যা সন্তান দেন, যাকে চান পুত্র সন্তান দেন, যাকে চান উভয়ই দেন এবং যাকে চান বন্ধ্যা রাখেন। তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।”
(সূরা শূরা: ৪৯-৫০)
🔸 অর্থাৎ, কোন নারী কত সন্তানের মা হবেন, সেই সন্তান কার হবে — সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
🧠 ৫. মানুষ চেষ্টা করবে, তবে ফলাফল আল্লাহর হাতে
🔹 ইসলাম বলে, আমরা চেষ্টা করবো, দোয়া করবো, বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র-পাত্রীর খোঁজ করবো।
কিন্তু শেষ সিদ্ধান্ত — আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত।
🎯 যেমন:
আপনি পাত্রীর অনেক খোঁজ করেছেন, কিন্তু বিয়ে হলো একদম অপ্রত্যাশিত কারো সঙ্গে।
অনেকে অনেক চিকিৎসা করেও সন্তান পায় না, আবার কেউ অনায়াসে পায় — এটাই তকদীর।
🌺 উপসংহার: এক নজরে সারাংশ
বিষয় তকদীর কীভাবে নির্ধারণ করে
বিয়ে কে কার জীবনসঙ্গী হবে, আগে থেকেই নির্ধারিত
গর্ভ কার গর্ভে সন্তান আসবে, তা আল্লাহ ঠিক করেন
সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে, কতজন হবে — তাও আল্লাহর তকদীর
রিজিক কে কার জন্য উপার্জন করবে — সেটাও নির্ধারিত
📌 শেষ কথা:
“তোমার জীবন তোমার পরিকল্পনায় চলে না — চলে আল্লাহর পরিকল্পনায়, আর সেটিই সর্বশ্রেষ্ঠ।”
0 মন্তব্যসমূহ