ঈশ্বরগঞ্জ বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার একটি উপজেলা, যা ১৯৮৩ সালের ১৫ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আয়তন ২৮৬.১৯ বর্গ কিলোমিটার। উপজেলাটি উত্তরে গৌরীপুর, দক্ষিণে নান্দাইল, পূর্বে নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া এবং পশ্চিমে ময়মনসিংহ সদর ও ত্রিশাল উপজেলার সাথে সীমানা ভাগ করে।
প্রশাসনিক বিভাগ: ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে:
- ঈশ্বরগঞ্জ
- সোহাগী
- সরিষা
- আঠারবাড়ী
- জাটিয়া
- মাইজবাগ
- মগটুলা
- রাজিবপুর
- উচাখিলা
- তারুন্দিয়া
- বড়হিত
জনসংখ্যা: ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩,৯১,০৭৮ জন, যার মধ্যে পুরুষ ১,৯৪,৫৫০ জন এবং মহিলা ১,৯৬,৫২৮ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১,৩৪২ জন।
শিক্ষা: উপজেলার শিক্ষার হার ৪৯.৯%, যেখানে পুরুষের হার ৫৩.৪% এবং মহিলাদের ৪৬.১%। এখানে ১৭৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৭টি কলেজ এবং ২৩টি দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্বেশ্বরী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত) এবং আঠারবাড়ী ডিগ্রি কলেজ (১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত) বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ইতিহাস: ঈশ্বরগঞ্জের পূর্ব নাম ছিল পিতলগঞ্জ। ঈশ্বরপাটনী নামে এক খেয়ামাঝির নামানুসারে এর নামকরণ হয় ঈশ্বরগঞ্জ। মুক্তিযুদ্ধের সময়, ১৯৭১ সালের ৯ ডিসেম্বর, ঈশ্বরগঞ্জ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী থেকে মুক্ত হয়।
ভূগোল ও জলবায়ু: ঈশ্বরগঞ্জের ভৌগোলিক অবস্থান ২৪°৩৩´ থেকে ২৪°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°২৮´ থেকে ৯০°৪৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে। এখানকার জলবায়ু গ্রীষ্মমণ্ডলীয়, যেখানে গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ২৫.৩° সেলসিয়াস এবং গড় বৃষ্টিপাত ২৩৭৭ মিমি।
অর্থনীতি: ঈশ্বরগঞ্জের অর্থনীতি প্রধানত কৃষিভিত্তিক। এখানে ধান, পাট, আখ, গম, আলু, সরিষা ইত্যাদি ফসল উৎপাদিত হয়। এছাড়া মৎস্য ও পশুপালনও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পর্যটন: ঈশ্বরগঞ্জে আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে পরিচিত, যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
ঈশ্বরগঞ্জ তার ঐতিহ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সুপরিচিত।
0 মন্তব্যসমূহ