১. ভৌগোলিক অবস্থান
মুক্তাগাছা ময়মনসিংহ জেলা সদর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এর পূর্ব দিকে ময়মনসিংহ সদর, পশ্চিমে ফুলবাড়িয়া, উত্তরে ত্রিশাল ও গৌরীপুর এবং দক্ষিণে ধোবাউড়া ও ফুলবাড়িয়া।
২. ইতিহাস
মুক্তাগাছার জমিদারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৭ শতকে। জমিদাররা মুক্তাগাছায় স্থাপন করেছিলেন বিভিন্ন প্রাসাদ, মন্দির ও পুকুর। জমিদার শশিকান্ত আচার্যের দানশীলতার জন্য এই জমিদার বাড়িটি খুবই খ্যাতি অর্জন করেছিল।
- জমিদার শশিকান্ত দত্ত ভারতের বেলুড় মঠ ও অন্যান্য দাতব্য প্রতিষ্ঠানে প্রচুর অর্থ দান করেন।
- ব্রিটিশ আমলেও মুক্তাগাছা জমিদার বাড়ির প্রভাবশালী ভূমিকা ছিল।
৩. জমিদার বাড়ি
মুক্তাগাছার জমিদার বাড়ি মুক্তাগাছার অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। এর ভেতরে রয়েছে সুদৃশ্য প্রাসাদ, দুর্গাকালী মন্দির, নাটমন্দির এবং পুকুর। জমিদার বাড়ির স্থাপত্যশৈলী পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ।
৪. মুক্তাগাছার মণ্ডা
মুক্তাগাছার মণ্ডা মিষ্টি সারা দেশে বিখ্যাত। জমিদারদের সময় থেকেই এই মিষ্টি প্রস্তুত হয়ে আসছে। এটি দুধ ও চিনি দিয়ে তৈরি বিশেষ এক ধরনের মিষ্টি, যা মুক্তাগাছা ভ্রমণ করলে অবশ্যই খাওয়ার মতো একটি খাবার।
৫. পর্যটন কেন্দ্র
মুক্তাগাছায় বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- জমিদার বাড়ি
- দুর্গাকালী মন্দির
- পুরাতন শিব মন্দির
- নান্দাইল পুকুর
- মুক্তাগাছা বাজারের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান।
৬. সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য
মুক্তাগাছার মানুষ ধর্মীয় উৎসব ও সংস্কৃতির প্রতি অত্যন্ত অনুরাগী। দুর্গাপূজা ও অন্যান্য হিন্দু ধর্মীয় উৎসবগুলো এখানে জমজমাটভাবে উদযাপন করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রামীণ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও মুক্তাগাছায় প্রচলিত।
৭. অর্থনীতি
মুক্তাগাছার অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। ধান, পাট ও সবজি উৎপাদনে মুক্তাগাছা সমৃদ্ধ। পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসা ও পর্যটনও অর্থনীতির একটি বড় অংশ।
মুক্তাগাছা ভ্রমণ করলে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একত্রে উপভোগ করা যায়। জমিদার বাড়ি ও মিষ্টি মণ্ডা এই এলাকার ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। আপনি যদি ইতিহাস ও ঐতিহ্য ভালোবাসেন, তবে মুক্তাগাছা আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য।
0 মন্তব্যসমূহ